বিদ'আতি আকিদা - Bidati Aqidah

একটি নীতি শেখে নিন।

___________________

🏟🏟মানুষ বড় পাপ করলে ঈমান থেকে বের হয়ে যায় এবং চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যায় তবে তাকে এ দুনিয়াতে কাফের বলা যাবে না বরং সে দুই স্তরের মাঝের স্তরের লোক।  এমন বিদআতী মু’তাযিলী বিশ্বাসের খন্ডন:🏟🏟

মু’তাযিলা একটি প্রাচীন ভ্রান্ত ফেরকা। তাদের আক্বীদা হল, ইহজগতে কেউ পাপ করলে সেই পাপী ঈমান থেকে বের হয়ে যায় কিন্তু তাকে কাফের বলা যাবে না বরং সে সবসময়ের জন্য জাহান্নামে থাকবে। [শারহু মুকাদ্দামা স্বহীহ মুসলিম, নভবী ১/৬৮] 

= অনেকে এই মন্তব্যকে দুই স্তরের মাঝের স্তর বলে থাকে (মানযিলাতুন বাইনাল মানযিলাতাঈন) । কারণ তাদের বিশ্বাসানুযায়ী সে না তো মুমিন আর না কাফের; বরং উভয়ের মাঝে অবস্থানকারী। 

= এই আক্বীদা সালাফদের নয়। সালাফগণের বিশ্বাস হচ্ছে, শিরক, কুফরী এবং বিশ্বাসগত নিফাক ব্যতীত পাপ করার ফলে কোনো ব্যক্তি ঈমান থেকে বের হয় না। সেই পাপী মৃত্যুর পূর্বে তাত্তবা করলে এবং তার তাত্তবা কবূল হলে সে পাপমুক্ত হয়ে কিয়ামতে উঠবে। নচেৎ সে তার পাপানুযায়ী শাস্তি পাবে অত:পর জান্নাতে যাবে কিন্তু চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না।

স্বহীহ মুসলিমের ভূমিকায় এমন মু’তাযেলি রাভীদের হাদীস গ্রহণ করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে এবং এরা সহীহ হাদীস নিজ বিশ্বাসের পক্ষে যেভাবে ব্যাবহার করত তারো উদাহারণ পেশ হয়েছে।

ইমাম মুসলিম বলেন: আমাকে হাদীস বর্ণনা করেছে আমর বিন আলী আবু হাফস। তিনি বলেন: আমি মুআয বিন মুআযের কাছে শুনেছি তিনি বলেন: আমি আউফ বিন আবী জামীলাকে জিজ্ঞাসা করলাম: আমর বিন উবাইদ আমাদের হাসান থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন: আল্লাহর রাসূল বলেন: ‍ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উঠাবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”।  আউফ বলেন: আল্লাহর কসম! আমর মিথ্যা বলেছে। সে এ দ্বারা তার খবীস মত (মুতাযেলি বিশ্বাস) সাব্যস্ত করতে চায়। [মুকাদ্দামা স্বহীহ মুসলিম/৬৮]

ইমাম নভবী উক্ত বর্ণনার ব্যাখ্যায় বলেন: যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উঠাবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়”।  এই বর্ণনাটি স্বহীহ এবং তা বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত।  ইমাম মুসলিম উক্ত হাদীসকে এই অধ্যায়ের পর বর্ণনা করেছেন।  জ্ঞানীদের নিকট উক্ত হাদীসের অর্থ হল: সে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় যে আমাদের তরীকা/পন্থা, ইলম ও আমলের অনুসরণকারী।  এই হাদীসের ব্যাখ্যার উপমা হচ্ছে, যেমন কেউ তার সন্তানকে ঐ সময় ধিক্কার স্বরূপ বলে, যখন সেই সন্তানের কাজ তাকে অপছন্দ হয়: তুমি আমার সন্তান না।  এই হাদীসের শব্দের মত যাবতীয় হাদীসের এই একই ব্যাক্ষা প্রযোজ্য হবে।  যেমন এই হাদীস (যে ধোকা দিবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়)।  [ব্যাখ্যা, ভূমিকা স্বহীহ মুসলিম/৬৮]

ইমাম নভবীর উপরোক্ত ব্যাখ্যার সারাংশ হল, যাবতীয় এমন হাদীস যাতে এই শব্দ থাকবে যে, ( যে এমন করবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় কিংবা দলভুক্ত নয়) তার অর্থ এটা নয় যে, সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়, কাফের হয়ে যায়; বরং ঐসব হাদীসের অর্থ হবে: ঐরূপ কাজ করা আমার তরীকা নয় কিংবা আমার নিয়ম নয়, কিংবা আমাদের কাজ নয়।  কিন্তু মুতাযেলীদের বিশ্বাস যেহেতু এই যে, পাপ করলে সে ঈমান থেকে বের হয়ে যায় তাই তাদের নিকট এমন হাদীসের অর্থ হবে, সে ঈমান থেকে বের হয়ে যায় আর সে মুমিন থাকে না।  উপরোক্ত বর্ণনায় হাদীস বর্ণনাকারী আউফ আমর বিন উবাইদকে এ কারণে মিথ্যুক বলেনি যে, এই হাদীসটি অপ্রমাণিত; বরং তার মিথ্যুক বলার কারণ হচ্ছে সে হাসানের নিকট এই হাদীস না শোনার পরেত্ত হাসান থেকে বর্ণনা করেছে এবং যেহেতু তার আক্বীদা হল, পাপ করলে পাপী ঈমান থেকে বের হয়ে যায় এবং চিরজাহান্নামী হয়ে যায়, তাই সে এই হাদীস দ্বারা নিজের আক্বীদা সাব্যস্ত করত: মুসলিমের উপর উত্তোলনকারীকে কাফের বলতে চায়, যা সালাফ তথা আহলে সুন্নতের বিশ্বাস নয়; বরং বিদআতী মুতাযেলীদের বিশ্বাস।  [শারহু স্বহীহ মুসলিম ১/৬৮]

এই মুতাযেলী সম্প্রদায় থেকে দ্বীন শেখা বৈধ নয় তাই সালাফগণ তাদের থেকে সতর্ক করতেন।  হাদীসের পন্ডিত আইয়্যূব সাখতিআনী একদা জানতে পারেন যে, সাল্লাম বিন আবী মুত্বী মুতাযেলী আমরের কাছে যাত্তয়া আসা করে, তখন তিনি সাল্লামকে সম্বোধন করে বলেন: যে ব্যক্তির দ্বীন সম্বন্ধে তুমি আশংকামুক্ত নত্ত, তার হাদীস কি নিরাপদের হতে পারে? [ভূমিকা স্বহীহ মুসলিম/৬৯]

এ যুগে ও  মুতাযেলি আক্বীদা ও মুতাযেলীদের বই পুস্তক পড়া থেকে সালাফীগণ অন্যদের সতর্ক করে থাকেন আর এটা সালাফদের নীতি কিন্তু আমাদের সমাজে এমনো লোক পাওয়া যায় যারা নির্দ্বিধায় মুতাযেলী আক্বীদা পোষণকারী লেখকের বই পুস্তক পড়ে থাকে বরং সে সকল তফসীর ও কিতাবাদী তাদের নিকট প্রিয় ও সমাদৃত! আমরা বলবো: যে ব্যক্তির দ্বীন সম্বন্ধে আপনি আশংকামুক্ত নন, তার বই-পুস্তক কি নিরাপদের হতে পারে??

Read Also :

Getting Info...

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.